প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট ২০২৩

Share This News

নবী-রাসুলদের প্রতি ভালোবাসা কেমন হওয়া জরুরি

নবী-রাসুলদের প্রতি ভালোবাসা কেমন হওয়া জরুরি

মহান আল্লাহ নবী-রাসুলদের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান ও মর্যাদা পোষণের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে তাঁদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশেও সীমা রক্ষা করতে বলেছেন। যেন মানুষ তাদের প্রভুত্ব দান করে না বসে অথবা তাদের আল্লাহর রাজত্বের অংশীদার মনে না করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে কিতাবিরা, তোমাদের দ্বিনের বাড়াবাড়ি কোরো না ও আল্লাহ সম্পর্কে সত্য ছাড়া বোলো না।

’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৭১)।

উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাসিম (রহ.) বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন কোরো না। কোনো সৃষ্টিকে আল্লাহপ্রদত্ত মর্যাদার ঊর্ধ্বে উঠিয়ো না। যেমন খ্রিস্টানরা ঈসাকে নবুয়তের জায়গা থেকে প্রভুত্বের জায়গায় নিয়ে গেছে।

একইভাবে সৃষ্টিকে প্রাপ্য মর্যাদা থেকে বঞ্চিত কোরো না। যেমন ইহুদিরা ঈসা (আ.)-কে ব্যভিচারের ফসল বলে।’ নাউজুবিল্লাহ! (হাশিয়াতু কিতাবিত তাওহিদ, পৃষ্ঠা ১৪৬)।

বরং নবী-রাসুলদের ব্যাপারে মুমিন শরিয়তের সীমা রক্ষা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে।

ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে তাদের হৃদয় ভক্তি-বিগলিত হওয়ার সময় কি আসেনি, আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তাতে? এবং পূর্বে যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের মতো যেন তারা না হয়—বহু কাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে যাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাদের বেশির ভাগই সত্যত্যাগী।’ (সুরা হাদিদ, আয়াত : ১৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার প্রশংসা করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি কোরো না, যেমন ঈসা ইবনে মারিয়াম সম্পর্কে খ্রিস্টানরা বাড়াবাড়ি করেছিল। আমি তাঁর বান্দা। তাই তোমরা বলবে, আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল।

’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৪৫)।

আল্লামা ইবনে বাত্তাল (রহ.) হাদিসের অর্থ এভাবে করেছেন, ‘তোমরা আমার সঙ্গে এমন গুণ যুক্ত করবে না, যা আমার ভেতর নেই। যেমন খ্রিস্টানরা ঈসা (আ.)-কে আল্লাহর পুত্র বলেছে। তারা এর মাধ্যমে কুফরি করেছে এবং বিভ্রান্ত হয়েছে।’ (শরহু সহিহিল বুখারি : ৯/২৫৪)

আলেমরা বলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা সংক্রান্ত অধিকারগুলো তিন প্রকার। কেউ অধিকারগুলো রক্ষা করলে তার ভেতর ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। তা হলো :

ক. শুধু আল্লাহর হক : আল্লাহর প্রথম হক হলো তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা। আল্লাহর নাম ও গুণাবলি, তাঁর রুবুবিয়্যাত (প্রভুত্ব) ও ‘উলুহিয়্যাত’ (উপাসনার অধিকারী হওয়া) সব কিছুতেই তিনি এক ও একক। এগুলোতে নিকটবর্তী ফেরেশতা ও নবী-রাসুলগণও শরিক নন।

খ. শুধু নবীদের হক : তাদের অধিকার হলো তাদের ডাকে সাড়া দেওয়া, তাদের যথাযথ সম্মান ও সহযোগিতা করা।

গ. উভয়ের হক : আল্লাহ ও তাঁর নবী-রাসুলদের প্রতি ঈমান আনা তথা বিশ্বাস স্থাপন করা তাদের উভয়ের হক। তবে এই বিশ্বাসের ভিত্তি হবে কোরআন ও সুন্নাহ অর্থাৎ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের বিশ্বাসের অনুকূল।