প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট ২০২৩

Share This News

‘পেরুসেটাস’ হতে পারে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাণী

‘পেরুসেটাস’ হতে পারে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাণী

পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে বড় প্রাণী বললেই আমাদের মাথায় আসে নীল তিমির কথা। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যত প্রাণী এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নীল তিমি। প্রাপ্তবয়স্ক একটি নীল তিমির গড় ওজন প্রায় ১৫০ টন। এরা দৈর্ঘ্যে ১০০ ফুটের মতো লম্বা হয়ে থাকে।

তবে সর্বকালের সবচেয়ে বড় প্রাণীর তকমা বদলে যেতে পারে। আর রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে তারই স্বজাতি দৈত্যাকার 'পেরুসেটাস' তিমি। এই তিমিটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ভারী প্রাণী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে, পেরুসেটাসের ওজন গড়ে ১৮০ টন।

বুধবার (২ জুলাই) নেচার জার্নালে পেরুসেটাস কলোসাস বা 'পেরু থেকে আসা বিশাল তিমি' নামে নতুন প্রজাতির এই তিমির বর্ণনা এসেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, এই তিমি প্রায় ৩৮ থেকে ৪০ মিলিয়ন বছর আগে ইওসিন যুগে বাস করত। ওজনের দিক দিয়ে এরা নীল তিমি কিংবা বৃহত্তম ডাইনোসরসহ অন্য যে কোন প্রাণীকে ছাড়িয়ে যাবে।

নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক ইতালির পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিজ্ঞানী জিওভান্নি বিয়ানুচি বলেন, এই প্রাণীর প্রধান বৈশিষ্ট্য অবশ্যই বেশি ওজন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, বিবর্তন এমন প্রাণী তৈরি করতে পারে- যা আমাদের কল্পনার বাইরে।

পেরুসেটাসের আংশিক কঙ্কালটি এক দশকেরও বেশি সময় আগে আবিষ্কার করেছিলেন সান মার্কোস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাস যাদুঘরের মারিও উরবিনা।

পেরুর ইকা মরুভূমির খাড়া একটি পাথুরে ঢালের পাশে একটি আন্তর্জাতিক দল বছরের পর বছর ধরে খনন করেছে। পেরুর এই অঞ্চল একসময় পানির নিচে ছিল এবং এটি তার সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবাশ্মের জন্য পরিচিত। পেরুসেটাস তিমির মেরুদণ্ড থেকে ১৩টি কশেরুকা, চারটি পাঁজর এবং একটি নিতম্বের হাড় পাওয়া যায়। হাড়গুলো অস্বাভাবিক বড়, অত্যন্ত ঘন।

গবেষকরা বলছেন, এই অতি ঘন হাড়গুলো ইঙ্গিত দেয়, তিমিটি অগভীর উপকূলীয় পানিতে বাস করতো। তবে তিমিটির দাঁতের কোন অংশ পাওয়া যায়নি, যার ফলে এর জীবনযাত্রার ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে।

আধুনিক সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী ব্যবহার করে তিমিটির আকার ও ওজন নির্ণয়ের জন্য একটি থিডি কঙ্কাল ব্যবহার করা হয়েছে। এ থেকে ধারণা করা যাচ্ছে, প্রাচীন প্রাণীটির ওজন ৯৪ থেকে ৩৭৫ টনের মধ্যে ছিল। আর সবচেয়ে বড় নীল তিমিগুলো প্রায় ২০০ টন ওজনের হয়ে থাকে।

নর্থইস্ট ওহিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটির জীবাশ্মবিজ্ঞানী হান্স থিউসেন বলেন, এমন একটি দৈত্যাকার প্রাণীকে দেখতে পারাটা খুবই রোমাঞ্চকর।

তথ্যসূত্র: এপি, আলজাজিরা