প্রকাশিত : সোমবার, ১৫ মে ২০২৩

Share This News

চিত্রনায়ক ফারুকের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন

চিত্রনায়ক ফারুকের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন

বিনোদন ডেস্ক: একটা সময় নায়ক হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। তাকে ডাকা হয় বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ‘মিয়া ভাই’। বর্ণাঢ্য অভিনয় ক্যারিয়ার খ্যাতিমান এই তারকার। সব ছেড়ে চলে গেছেন পরপারে। যেখান থেকে কেউ আর ফিরে আসে না।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল ফারুকের। দেশ স্বাধীনের বছরই এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে একজন রাগী নায়কের। তিনি ফারুক। ওই ছবিতে তার বিপরীতে নায়িকা ছিলেন কবরী সারোয়ার।

এরপর ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’-এ পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭৫ সালে গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মিত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ ব্যাপক ব্যবসাসফল ও আলোচিত হয়।

১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ফারুক। এরপরে ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত তিনটি ছবি ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’ ও ‘নয়নমনি’। ছবি তিনটি বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।

পরের বছর শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত কালজয়ী উপন্যাস ‘সারেং বৌ’ অবলম্বনে নির্মিত ‘সারেং বৌ’ ও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ফারুক। চলচ্চিত্র দুটি নারীকেন্দ্রিক হলেও তার অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।

১৯৭৯ সালে ফারুক অভিনীত নাগরদোলা, দিন যায় কথা থাকে, কথা দিলাম, মাটির পুতুল, সাহেব, ছোট মা, এতিম, ঘরজামাই চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসাসফল হয়। ১৯৮০ সালে ‘সখী তুমি কার’ ছবিতে শাবানার বিপরীতে শহুরে ধনী যুবকের চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করেন ফারুক।

১৯৮৭ সালে ‘মিয়া ভাই’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে ‘মিয়া ভাই’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ২০১৬ সালে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে সরকার ফারুককে দেয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা। তিনি ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্যও ছিলেন।

কিন্তু সব ছেড়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন নায়ক ফারুক। ২০২১ সালের মার্চ থেকে তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে একটি বিরল রোগের চিকিৎসা চলছিল তার।

দেড় বছরেরও বেশি সময়ের চিকিৎসায় বেশ সুস্থও হয়েছিলেন নায়ক ফারুক। কিন্তু জীবিত অবস্থায় দেশে ফেরা হলো না তার। মঙ্গলবার সকালে তাকে জন্মভূমিতে আনা হবে মৃত অবস্থায়। কিংবদন্তি এই অভিনেতার মৃত্যুতে এরইমধ্যে চলচ্চিত্রাঙ্গণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।