প্রকাশিত : সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

Share This News

এবার আফগান শক্তি দেখছে ক্রিকেট বিশ্ব

এবার আফগান শক্তি দেখছে ক্রিকেট বিশ্ব

এবার আফগান শক্তি দেখছে ক্রিকেট বিশ্ব। ইতিহাস গড়েই চলছে রশিদ-নবীরা। আরো একবার জন্ম দিল রূপকথার। ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিল আরো একবার। ইংল্যান্ডের পর হারাল পাকিস্তানকে। শাহিদি-রহমতদের উল্লাসধ্বনি যেন বলতে চাইছে, ‘কার আছে সাধ্য আমাদের রুখবার?’

ভারত বিশ্বকাপ যেন আফগানিস্তানের ইতিহাস তৈরির মঞ্চ। দিল্লির অরুণ জেটলির পর এবার চেন্নাইয়ের এম এ চিদম্বরাম স্টেডিয়াম, রূপকথা লিখেই চলছে আফগানিস্তান। সোমবার (২৩ অক্টোবর) প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছে দলটি। পাকিস্তানের দেয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্য ৬ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জিতে নিয়েছে আফগানরা।

যে মাঠের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ২৯১, সেখানে ২৮৩ লড়াকু পুঁজিই বটে। তবে তা যেন গায়েই মাখেনি আফগানিস্তান। অগ্রাহ্য করল পাকিস্তানি পেসারদেরও। চোখে চোখ রেখেই জিতে নিলো ম্যাচ।

জয়ের ভীতটা গড়ে দেয় উদ্বোধনী জুটিই। আসর জুড়েই প্রতিপক্ষের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ানো রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান জ্বলে ওঠেন আরো একবার। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়াতে থাকে রান। তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে অনায়াসেই।

তবে ২১.১ ওভারে ১৩০ রানে ভাঙে এই জুটি। আঘাত হানেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। উসামা মিরের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান গুরবাজকে। আউট হওয়ার আগে অবশ্য খেলেন ৫৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস। গুরবাজ ফিরলেও রহমত শাহকে নিয়ে শতকের পথে এগিয়ে চলছিলেন ইব্রাহিম। ৩৩.৩ ওভারে তাকে ফেরান হাসান আলি। ১১৩ বলে ৮৭ রানে থামেন ইব্রাহিম।

অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদিকে সাথে নিয়ে বাকি পথটা পাড়ি দেন রহমত। তুলে নেন নিজের ফিফটিও। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৮৪ বলে ৭৭ রানে। আর ৪৯তম ওভারের শেষ বল বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন শাহিদি। তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৫ বলে ৪৮ রানে।

চেন্নাইয়ে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৮২ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ব্যাট হাতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দেন বাবর, ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। ইফতেখারের ৪০ রানের ইনিংসও রেখেছে এই সংগ্রহ পেতে বড় ভূমিকা।

পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৫৭ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। বড় অবদান আব্দুল্লাহ শফিকের। ইমাম উল হক তেমন সুবিধা করতে পারেননি এদিন। ২২ বলে ১৭ করে ওমরজাইয়ের আঘাতে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। এরপর অধিনায়ক বাবর আজমকে নিয়ে ইনিংস সাজাতে শুরু করেন শফিক। ৫৪ রান আসে তাদের যুগলবন্দীতে।

দারুণ ছন্দে থাকা আব্দুল্লাহ শফিকের ব্যাটে রান দেখা দিয়েছে আজও। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও তুলে নেন অর্শশতক। এই নিয়ে আসরের চার ম্যাচের তিনটিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেললেন এই ব্যাটার। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি, ৭৫ বলে ৫৮ করে ফিরতে হয়েছে তাকে। শিকার হন নূর আহমেদের।

পরের ওভারে ফেরান মোহাম্মদ রিজওয়ানকেও। ১০ বলে ৮ রান করা রিজওয়ানকে মুজিবের ক্যাচ বানান। ২৪.৪ ওভারে ১২০ রানে ৩ উইকেট হারায় পাকিস্তান। সেখান থেকে সৌদ শাকিল ও শাদাব খানের সাথে সমান ৪৩ রানের জুটি গড়েন বাবর। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধশতক। সৌদ ফিরেন ৩৪ বলে ৩৫ রান করে।

৪২তম ওভারে নূর আহমেদের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন বাবর আজম। ইনিংস থামে তার ৯২ বলে ৭৪ রানে। সেখান থেকে রান বাড়ানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন শাদাব খান ও ইফতেখার আহমেদ। দু’জনের ৫০ বলের জুটিতে যোগ হয় ৭৩ রান। শেষ ওভারে ফেরেন দু’জনেই।

২৭ বলে ৪০ করেন ইফতেখার, শাদাবের ব্যাটে আসে ৩৭ বলে ৪০ রান। পাকিস্তানের ইনিংস থামে ৭ উইকেটে ২৮২ রানে। নূর আহমেদ ৩ ও নাভিন উল হক নেন ২ উইকেট।

ইংলিশদের হারানোর পর বলা হচ্ছিল ‘অঘটন’। কিন্তু তা যে অঘটন ছিল না, এরই প্রকাশ পেল চেন্নাইয়ে। অঘটন না হয় একবার ঘটে।