প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩

Share This News

ফের গ্যাসের দাম বাড়াতে ভিন্ন কৌশল তিতাসের

ফের গ্যাসের দাম বাড়াতে ভিন্ন কৌশল তিতাসের

বর্তমানে তিতাসের আবাসিক সংযোগে মিটারবিহীন গ্রাহকদের প্রতি মাসে সিঙ্গেল বার্নারের জন্য ৯৯০ এবং ডাবল বার্নারের জন্য ১০৮০ টাকা বিল দিতে হয়। তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দাবি, এসব সংযোগে বিল অনুপাতে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করা হয়। এতে সংস্থাটির লোকসানের পরিমাণ বেড়েই চলছে। তাই এসব গ্রাহকের মাসিক বিল বাড়াতে চায় তিতাস।

সংস্থাটির তথ্যমতে, শিগগিরই প্রায় ২৬ লাখ মিটারবিহীন আবাসিক গ্যাস ব্যবহারকারীর মাসিক বিল বাড়ানো হতে পারে। তাদের দাবি, এসব সংযোগে গ্রাহকরা ৩৯ থেকে ৪৭ শতাংশ পর্যন্ত বেশি গ্যাস ব্যবহার করেন। তাই ব্যবহারকারীদের মাসিক বিল বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে তিতাস কর্তৃপক্ষ।

যদি সংস্থাটির এই বিল বাড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়, তাহলে সিঙ্গেল ও ডাবল বার্নারের মাসিক বিল হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৭৯ টাকা এবং ১ হাজার ৫৯১ টাকা। বর্তমানে এই বিলের পরিমাণ যথাক্রমে ৯৯০ এবং ১ হাজার ৮০ টাকা। অর্থাৎ সিঙ্গেল বার্নার এবং ডাবল বার্নারের ব্যবহারকারীরা প্রতি ইউনিট ১৮ টাকা হারে যথাক্রমে ৫৫ ইউনিট (ঘন মিটার) এবং ৬০ ইউনিট গ্যাসের জন্য বিল পরিশোধ করে।

এদিকে জ্বালানিতে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার ফলে গত জানুয়ারিতে চার শ্রেণির ব্যবহারকারীদের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দাম রেকর্ড ১৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে সরকার। বিইআরসি জানিয়েছে, সম্প্রতি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তারা পেয়েছেন। যা আসন্ন কমিশন সভায় উত্থাপন করা হবে এবং এর যৌক্তিকতা যাচাই-বাছাই করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিইআরসি’র চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিনবলেন, ‘গত রোববার তিতাসের কাছ থেকে আমরা এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পেয়েছি। এখনও এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যেহেতু তারা বেশকিছু কারণ দেখিয়ে প্রস্তাবনাটি পাঠিয়েছে-তাই তা বিচার-বিশ্লেষণ করা হবে। প্রয়োজনে গণশুনানিও করা হতে পারে। তাই গ্যাস বিল বাড়বে কিনা তা এখনই বলা যাবে না। গোটা প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই শেষে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হবে।’

বিইআরসির সূত্র মতে, চলতি সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। এদিকে তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানির অধীনে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে মোট ২৮ লাখ ৫৭ হাজার আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। তাদের মধ্যে, ২৫ লাখ ২৫ হাজার মিটারবিহীন এবং ৩ লাখ ৩২ হাজার গ্রাহক প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারী।

তিতাসের এই বিল বাড়ানোর প্রস্তাবে দাবি করা হয়, একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সিস্টেম লস ও ২০২২ সালের শুল্ক আদেশের কারণে সংস্থাটি এখন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এমতাবস্থায় ননমিটার গ্রাহকদের বাড়তি গ্যাসের ব্যবহার সংস্থাটির লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

তবে জ্বালানি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংস্থাটির প্রায় ৯৫ শতাংশের বেশিই হচ্ছে মিটারবিহীন গ্রাহক। বছরের পর বছর ধরে অবৈধ সংযোগ বেড়ে চললেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। এখন এই লোকসানের ভার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে আবাসিক গ্রাহকদের উপর। এছাড়াও প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের যে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে তা কেন বাড়ানো হচ্ছে না- বলেও প্রশ্ন বিশ্লেষকদের।