ইউক্রেনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ আটকাপড়ে আছেন বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকে আছেন।
মঙ্গলবার সকালে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়া হামলা চালালে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর বিবিসির।
তিনি বলেন, হামলায় ১৩৯টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মানুষ আটকা পড়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মঙ্গলবার রাতে তার ভিডিও ভাষণে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জীবনকে আধুনিক রাশিয়া তার নিজের জন্য হুমকি বলে মনে করে। রাশিয়া একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্বে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, রুশ হামলায় ৮ বছর বয়সি একটি মেয়েসহ আটজন নিহত হয়েছেন। সেন্ট্রাল ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের পাভলোহরাদে একজন নারী নিহত হয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকালের এই হামলায় বিশেষভাবে খারকিভ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মেয়র ইহোর তেরেখভ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শহরের ফ্ল্যাটের একটি ব্লকের অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং উদ্ধারকর্মীরা জীবিতদের জন্য ধ্বংসস্তূপের ভেতরে অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
হামলার পর শহরের আকাশ আগুনে পোড়া কমলা রঙে পরিণত হয়। মূলত শহরটিতে হামলায় একাধিক ধরনের রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। শহরটি রাশিয়ান সীমান্তের খুব কাছাকাছি অবস্থিত এবং এই কারণে আকাশপথে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে আটকানো বেশ কঠিন।
খারকিভের বাসিন্দা নাটালিয়া বিবিসিকে বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এতো ‘জোরে’ বিস্ফোরণের শব্দ হয়েছে বলে তিনি মনে করতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি কেঁপে উঠেছিল। পুরোটাই খুব জোরে ছিল। সেখানে বিস্ফোরণ হয়, তারপর আরও দশ সেকেন্ড পর আরেকটি বিস্ফোরণ।’
তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ বিদ্যুৎ ও উত্তাপহীন অবস্থায় রয়েছে। ভয় ও ঘৃণা ছাড়া এই মুহূর্তে আমি কিছুই অনুভব করছি না।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নতুন রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আরও সাতজন আহত হয়েছেন বলে তেরেখভ জানিয়েছেন।
এদিকে কিয়েভে সকালে আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিমান হামলা চলে। যা গত ২ জানুয়ারির পর থেকে দীর্ঘতম। হামলায় সেখানে ফ্ল্যাটের একটি ব্লকে আগুন লাগলে আরও বেশ কয়েকজন আহত হন এবং সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে এক তরুণীকে টেনে বের করে আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকারীরা ভেবেছিলেন তিনি মারা গেছেন, কিন্তু তিনি এখন হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন। বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিয়েভের সেন্ট্রাল সোলোমিয়ানস্কি এবং পশ্চিমের সোভিয়াতোশিনস্কি জেলায়।
সোভিয়াতোশিনস্কি জেলায় বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার কয়েক ঘণ্টা পরে জরুরি পরিষেবা বিবিসিকে বলেছে, তারা এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছে এবং বিস্ফোরক খুঁজছে।