প্রকাশিত : শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩

Share This News

আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের ইন্টারেস্ট স্প্রেড কমেছে ৬০ শতাংশ

আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের ইন্টারেস্ট স্প্রেড কমেছে ৬০ শতাংশ

এশিয়া ডেইলি নিউজ ডেস্ক: গত এপ্রিল মাসে দেশে চলমান ৩০টি এনবিএফআই এর মধ্যে ১০টিরই ইন্টারেস্ট স্প্রেড এখন নেগেটিভ। সবচেয়ে বেশি ১১.৩১ শতাংশ নেগেটিভে আছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পিকে হালদারের অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড।

নন-পারফর্মিং ঋণ (এনপিএল) বেড়ে যাওয়ায় গত এপ্রিল মাসে নন-ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউশনস (এনবিএফআই) এর ইন্টারেস্ট স্প্রেড আগের মাসের তুলনায় ৬০ শতাংশ কমে গেছে। ইন্টারেস্ট রেট স্প্রেড কমে গেলে তা সরাসরি প্রতিষ্ঠানের আয়ে প্রভাব ফেলে। একটি এনবিএফআই কে ভালোমতো চলতে গেলে অন্তত ৩ শতাংশ স্প্রেড রাখতে হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

যে সুদ হারে ব্যাংক বা এনবিএফআই টাকা ধার দেয় এবং তারা যে সুদ হারে আমানত গ্রহণ করে, তার মধ্যকার পার্থক্যই ইন্টারেস্ট রেট স্প্রেড।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এনবিএফআইগুলো গড়ে ৭.৮৩ শতাংশ সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। এর বিপরীতে তারা ঋণের ইন্টারেস্ট পাচ্ছে ৮.২৭ শতাংশ। ফলে তাদের ইন্টারেস্ট রেট স্প্রেড ০.৪৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ মার্চ মাসেও প্রতিষ্ঠানগুলো লোনের বিপরীতে ৮.৮৯ শতাংশ ইন্টারেস্ট পেত, স্প্রেড ছিল ১.১১ শতাংশ।

ডিপোজিটের ইন্টারেস্ট রেট অল্প বাড়লেও স্প্রেড অনেক কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ লোনের রেট কমে যাওয়া। এনপিএল বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলোর লোনের এভারেজ ইন্টারেস্ট রেট কমে যায়, ফলে ইন্টারেস্ট স্প্রেডও কমে যায় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও কায়সার হামিদ।

এনবিএফআই গুলোর ডিপোজিট বা লেন্ডিং রেট খুব বেশি বাড়েনি। দুর্বল এনবিএফআই গুলোর এনপিএল কমেনি, উল্টো তাদের ডিপোজিটের কস্ট অনেক বেড়ে গেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের স্প্রেড অনেক ক্ষেত্রে নেগেটিভ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিলে দেশে চলমান ৩০টি এনবিএফআই এর মধ্যে ১০টিরই ইন্টারেস্ট স্প্রেড এখন নেগেটিভ। সবচেয়ে বেশি ১১.৩১ শতাংশ নেগেটিভে আছে পিকে হালদারের অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস।

আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক থেকে এনবিএফআইগুলোর যেসব লোন নেওয়া ছিল, সেগুলোর জন্য এখন আগের তুলনায় বেশি সুদ দিতে হচ্ছে। এসব কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বেড়ে গেছে। আবার ইন্টারেস্ট রেটে ক্যাপ থাকার কারণে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কম্পিট করাটা জটিল হয়ে গেছে। ভালো অবস্থানে থাকার পরও আমাদের ইন্টারেস্ট স্প্রেড চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭০ বেসিস পয়েন্ট কমেছে। আমাদের অবস্থাই যদি এমন হয়, তাহলে মাঝারি বা ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর অবশ্যই চাপ আরো বেশি পড়ছে।

বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ডিপোজিটের বিপরীতে ৭ শতাংশ এবং লোনের বিপরীতে ১১ শতাংশ সুদ চার্জ করতে পারে। অবশ্য মৌখিকভাবে এনবিএফআইগুলোকে সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সুদে ডিপোজিট নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সেটিও মানছে না তারা। ১০টি এনবিএফআই গত এপ্রিলে ৮ শতাংশের বেশি সুদ দিয়েছে ডিপোজিট সংগ্রহ করতে গিয়ে। সবচেয়ে বেশি ১১.৪০ শতাংশ দিচ্ছে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড।

বেশি রেট দেওয়া অন্য এনবিএফআইগুলো হলো- উত্তরা ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, সিভিসি ফাইন্যান্স, লঙ্কান অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্স এবং লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স। তবে, বেশি সুদ দিয়েও ডিপোজিট পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে বেশ কয়েকটি এনবিএফআই।