প্রকাশিত : শুক্রবার, ৯ আগস্ট ২০২৪

Share This News

অন্তবর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএসইসি’র শীর্ষ ব্যক্তিরা

অন্তবর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএসইসি’র শীর্ষ ব্যক্তিরা

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও কমিশনের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, অন্তবর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত না পেলে তারা কাজ করতে পারছেন না। আবার অফিসে আসাও বন্ধ করতে পারছেন না।

যেহেতু বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও আক্রোশ চলছে, সেহেতু তারা অফিসে আসাও নিরাপদ মনে করছেন না।

গত সোমবার (০৫ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে পরের দিন সরকারি অফিস-আদালত পুনরায় চালু হয়। তবে সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিতে কর্মরত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এরমধ্যে চাপের মুখে কোন কোন সংস্থার চুক্তিভিত্তিক ব্যক্তিদের পদত্যাগ করতেও বাধ্য করা হয়।

এর প্রেক্ষিতে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত উল ইসলাম এবং কমিশনার ড. শামসুদ্দিন আহমেদ, ড. এটিএম তারিকুজ্জামান ও মোহাম্মদ মহসিন চৌধুরী অফিসে উপস্থিতি থেকে বিরত থাকেন।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের বিরুদ্ধে শোডাউন করেন এবং চার ডেপুটি গভর্নরসহ ছয় শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাজেহাল করে তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করে। গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার অফিসে অনুপস্থিত থাকেন বলে কর্মকর্তাদের আক্রোশ থেকে রেহাই পেয়ে যান।

এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োজিত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বড় ধরণের শোডাউন হয়। তার অন্যায় ও একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সোচ্চা হয়ে তার শাস্তির দাবি করেন। পাশাপাশি দুর্নীতিপরায়ন শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদত্যাগও দাবি করেছেন।

অপরদিকে, বিএসইসির কর্মকর্তারা বৈঠক করে প্রতিষ্ঠানটির সংস্কারের দাবি তুলেছেন। তারা রাজনৈতিকা বিবেচনায় চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগ বন্ধেরও দাবি করেছেন।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক এবং কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বৈঠক করে বলেছেন, পূর্ববর্তী সরকার সংস্থার বাইরে থেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় চেয়ারম্যান ও কমিশনাদের নিয়োগ করেছিল, যাদের মধ্যে অনেকের শেয়ারবাজার সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব ছিল। তিনি বলেন, তাদের দুর্বল কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

তাই তারা অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মেধা ও শ্রমকে স্বীকৃতি দিয়ে কমিশনার পদে পদোন্নতির দাবি করেছেন।

প্রসঙ্গত, বিএসইসি’র কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন কমিশনার নিয়ে গঠিত। বর্তমান বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং দুই কমিশনার- ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং ড. রুমানা ইসলাম-  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

গত এপ্রিল মাসে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং কমিশনার ড. শামসুদ্দিন আহমেদকে আরও চার বছরের মেয়াদে পুনর্নিয়োগ করা হয়।

পরবর্তীতে মে মাসে বাংলাদেশ কর্মচারি কল্যাণ বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মহসিন চৌধুরী এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামানকে বিএসইসির কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়।

এর আগে ড. তারিকুজ্জামান বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ হওয়ার পর তিনি নির্বাহী পরিচালক থেকে পদত্যাগ করেন।

আর প্রথম নারী কমিশনার হিসেবে ড. রুমানা ইসলাম বিএসইসিতে ২০২২ সালের মে মাসে চার বছরের জন্য নিয়োগ পান।