প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩

Share This News

কোরআনে মানুষের অন্তর সম্পর্কে কী বলা হয়েছে

কোরআনে মানুষের অন্তর সম্পর্কে কী বলা হয়েছে

বিষ যেমন মানুষের জন্য ক্ষতিকর তেমনি এমন কিছু আচরণ আছে যা ক্বলবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যা মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করে। পরিণামে মানুষের দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ বরবাদ হয়ে যায়। তাই এ আচরণগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। মানুষের যে আচরণগুলো ক্বলব নষ্টের জন্য ক্ষতিকার ক্বলবের ক্ষতি থেকে বাঁচতে কিছু আচরণ  তুলে ধরা হলো। 

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় কলবের বা অন্তরের কথা বর্ণনা করেছেন। কিছু আয়াতে ভালো অন্তরের কথা বলা হয়েছে। আর কিছু আয়াতে মন্দ কলবের কথা বলা হয়েছে। নিম্নে আমরা উভয় প্রকার কলব নিয়ে আলোচনা করব। আর আমরা দেখে নেব আমাদের কলব কোন ধরনের বা কাদের অন্তর্ভুক্ত।

বিনম্র অন্তর: যে অন্তর আল্লাহ তাআলার প্রতি পূর্ণরূপে অর্পিত। আল্লাহর বিধি-বিধানে পূর্ণরূপে বিশ্বাসী। আর সে অন্তর শয়তানের কুমন্ত্রণায় কর্ণপাত করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তারা যেন জেনে নেয় এটাই (অর্থাৎ এ কালামই) সত্য, যা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এসেছে অতঃপর তারা যেন তাতে ঈমান আনে এবং তাদের অন্তর তার প্রতি ঝুঁকে পড়ে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের জন্য সরল পথের হিদায়াতদাতা। ( সুরা : হজ, আয়াত : ৫৪) 

সুস্থ হৃদয়: যে অন্তর সব ধরনের খারাপি থেকে সুস্থ। সব ধরনের কুফর-শিরক ও বিদাত থেকে পবিত্র। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তবে যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে সুস্থ মন নিয়ে সে মুক্তি পাবে।’ (সুরা : শুআরা আয়াত : ৮৯)

আল্লাহমুখী হৃদয়: শয়নে-স্বপনে সংগোপনে, সর্বাবস্থায় যে হৃদয় আল্লাহর প্রতি অভিমুখী আল্লাহকে স্মরণ করে। কোনো গুনাহ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবা করে ফিরে আসে আনুগত্যের দিকে। আল্লাহ বলেন, ‘যে দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে তাঁকে না দেখেই এবং আল্লাহর দিকে বিনীত অন্তর নিয়ে উপস্থিত হয়।’ (সুরা : কাফ, আয়াত : ৩৩)

অন্ধ হৃদয়: যে হৃদয় ভালো-মন্দ নিরূপণ করতে পারে না। সব কিছু স্পষ্ট হলেও সে থাকে অন্ধের মতো। আল্লাহ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ হয় না; বরং অন্ধ হয় সেই হৃদয়, যা বক্ষদেশে বিরাজ করে। (সুরা : হজ, আয়াত : ৪৬)

উদাসীন হৃদয়: আল্লাহ তাআলার বিভিন্ন বিধানের ব্যাপারে উদাসীন। অন্যদিকে দুনিয়ার প্রতি সদা সজাগ। প্রবৃত্তির অনুসরণে মত্ত। কিন্তু সত্য গ্রহণে উদাসীন। আল্লাহ বলেন, এমন কোনো ব্যক্তির কথা মানবে না, যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ থেকে গাফিল করে রেখেছি, যে নিজ খেয়াল-খুশির পেছনে পড়ে রয়েছে এবং যার কার্যকলাপ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। (সুরা : কাহাফ, আয়াত : ২৮)

অহংকারী অন্তর: যার ভেতর অহংকারে পরিপূর্ণ। অহংকারের কারণে সে ভালো জিনিসের অনুসরণ করতে পারে না। এমনকি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য তার জন্য অহংকার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। নিজেকে প্রবল ক্ষমতাধর মনে করে। আল্লাহ বলেন, এভাবেই আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তির অন্তরে মহর মেরে দেন। (সুরা : গাফের, আয়াত : ৩৫)

কঠোর অন্তর: যে অন্তরে কোনো ধরনের দয়ার লেশমাত্র নেই। কারো দুঃখে তার অন্তর ব্যথিত হয় না। আল্লাহ বলেন, আপনি যদি রূঢ় প্রকৃতির ও কঠোর হৃদয়ের হতেন তাহলে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে যেত। (সুরা : আলে-ইমরান, আয়াত : ১৫৯)

সন্দিহান অন্তর: যে অন্তরে সন্দেহের বাসা বেঁধে আছে। তার অন্তর সব সময় সন্দেহের মাঝে ঘুরপাক খেতে থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার কাছে (জিহাদ না করার) অনুমতি চায় তো তারা, যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান রাখে না এবং তাদের অন্তর সন্দেহে নিপতিত এবং তারা নিজেদের সন্দেহের ভেতর দোদুল্যমান।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৪৫)