প্রকাশিত : সোমবার, ১২ জুন ২০২৩

Share This News

ভৈরবে পানিতে ডুবে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বড় বোনের আত্মহত্যা

ভৈরবে পানিতে ডুবে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বড় বোনের আত্মহত্যা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পানিতে ডুবে ভাই নিরব মোল্লা (১২) নামে ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ভাই এর মৃত্যুর খবর শুনে বোন নাজা বেগম (১৮) আত্মহত্যা করার জন্য বাড়ীর দুতলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে। এ সময় সে গুরুতর আহত হয়। পারে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় ল্যবএইড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

নিহত নিরব মোল্লা ও নাজমা বেগম চন্ডিবের গ্রামের বাসির মোল্লার ছেলে ও মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে শহরের চন্ডিবের এলাকায় একটি ডোবাতে।

প্রত্যক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা গেছে গতকাল সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে চন্ডিবের মোল্লা বাড়ীর ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র নিরব মোল্লা বাড়ীর পাশের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। এসময় ফুটবল পানিতে পড়ে গেলে ফুটবলটি পানি থেকে আনতে গিয়ে সে পানিতে ডুবে মারা যায়। এসময় তার বন্ধুরা তাকে পানি থেকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। তারপর স্বজনদের অনুরোধে তাকে ইসিজি করানোর জন্য পাশের একটি প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে নার্স খাদিজাকে ডেকে আনা হয়। পরে ইসিজি করার পর বলা হলো নিরব মারা গেছে।

এসময় তার স্বজনরা নার্স খাদিজাকে মারধোর শুরু করে। তাকে বাঁচাতে কর্তব্যরত ডাক্তার ও কর্মচারীরা এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধোর করে আহত করা হয়। আহতরা হলো ডাঃ রওশন আরা রিপা, কর্মচারী সেলিম, ক্লিনিকের নার্স খাদিজা বেগম ও ক্লিনিক কর্মচারী শাহ আলম। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এদিকে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বোন নাজা বেগম তার বাসার দুতলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে স্বজনরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে এলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকায় প্রেরণ করে।পরে রাত ৯টার দিকে নাজাকে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।এদিকে এদের বাড়িতে শোকের মাতন বইছে।

আহত খাদিজার মা রৌশনআরা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে ইসিজি করতে ক্লিনিক থেকে হাসপাতালে আসে। ইসিজি করার পর মৃত্যুর খবরে নিরবের স্বজনরা অন্যায়ভাবে আমার মেয়েকে মেরে গুরুতর আহত করে।

নিহত নিরবের চাচা নাসির মোল্লা বলেন, আমার ভাতিজা পানিতে ডুবে মারা যায়। এখবর পেয়ে আমার ভাতিজি দুতলার ছাদ থেকে পড়ে আত্মহত্যার করে। হাসপাতালের ঘটনাটি দুঃখজনক।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার রওশন আরা রিপা জানান, নিরব নামের শিশুটি হাসপাতালে আনার পর তাকে মৃত পায়। স্বজনদের চাপে ইসিজি করা হয়েছে। হাসপাতালে কর্মী না থাকায় বাইরের ক্লিনিক থেকে নার্স খাদিজাকে ডেকে আনা হয়। ইসিজি করার পর মৃত ঘোষনা করা হলে নিহতের স্বজনরা আমার উপর চড়াও হয় এবং আমাকে তারা শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে।

এসময় তারা আরও তিনজনকে মেরে আহত করে। তার বোন নাজা বেগমকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বুলবুল আহমেদ জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। মারা যাওয়া রোগীকে ডাক্তারগন জীবিত করে দিতে পারবেনা। নিহতের স্বজনরা ডাক্তারসহ ৪ জনকে মেরে আহত করেছে। এবিষয়ে ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করা হয়। আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনা জানিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তা করছি।