প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩

Share This News

অনাহারে উত্তর কোরিয়ায় হাজার হাজার মানুষের আত্মহত্যা

অনাহারে উত্তর কোরিয়ায় হাজার হাজার মানুষের আত্মহত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর কোরিয়া বিশ্ব থেকে এক্কেবারে বিচ্ছিন্ন এক দেশ । সেখানে সব ধরনের বিদেশি গণমাধ্যমের প্রবেশ নিষেদ। তাই কি হয় দেশটিতে বলা যায় না, কিংবা খবর পাওয়া যায় না। তবে মাঝে মধ্যে কিছু ভংকর খবর বেরিয়ে পড়ে। শাসকদের কড়া নজর এড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব খবর বাইরে প্রকাশ করেন দেশের কিছু নাগরিক। তবে ধরা পড়লে নিশ্চিত মত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তাদের।

করোনা ও মার্কিন নিষেজ্ঞাকার কারণে দেশটি অর্থনীতি দিন দিন পুঙ্গ হয়ে পড়ে। ক্রমাগত অভাব অনটনের কারণে সেখানে বেড়ে আত্মহত্যার পরিমাণ। সে দেশের নাগরিকরা ইচ্ছে করলে অন্য দেশগুলোর মতো বাইরের কোনো দেশে গিয়ে কাজও করতে পারেন না। কারণ এটা নিষিদ্ধ। আর পালিয়ে যাবারও উপায় নেই। সীমান্তে এমনভাবে পাহারা বসানো হয়েছে যে পালাতে গেলে নিশ্চিত মৃত্যুবরণ করা ছাড়া উপায় নেই। হয় গুলিতে নয় ফাঁসিতে ঝুলতে হয়।

জানা যায়, গত বছরের তুলনায় নাকি ৪০ শতাংশ বেড়েছে আত্মহত্যা! অনাহারে যত মানুষ মারা যাচ্ছেন, তার থেকে ঢের বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে আত্মহত্যায়। এই প্রবণতাকে ‘সমাজতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা’ তথা একধরনের রাষ্ট্রদ্রোহ বলেই উল্লেখ করে আত্মহত্যা বন্ধ করতে দেশবাসীকে নির্দেশ দিলেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন। এবিষয়ে পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় প্রশাসনগুলিকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্ত তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না।

কেন এভাবে আত্মহননের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে উত্তর কোরিয়ায়? জানা যাচ্ছে, খিদে ও অপরিসীম দারিদ্রের ধাক্কাতেই এই চরম পথ বেছে নিচ্ছেন বহু মানুষ। প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ না করলেও সংখ্যাটা যে উদ্বেগজনক তা জানা যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, সেদেশে আত্মহত্যা বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এই বিপুল সংখ্যাবৃদ্ধিতে তাই কপালে চিন্তার ভাঁজ কিমের।

কিম জানিয়েছেন আত্মহত্যা হল ‘সমাজতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা’। যেনতেনপ্রকারেণ একে রুখতে স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কোনও অঞ্চলে আত্মহত্যা বাড়লে স্থানীয় প্রশাসকদেরও কাঠগড়ায় তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি বারবার এই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। দেখা গিয়েছে, গোটা পরিবারই আত্মহত্যা করছে এমন নজিরও রয়েছে। এই ধরনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে শেষমেশ এই নির্দেশ দিয়েছেন কিম।

দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার হুঁশিয়ারিতে এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক। দুই দেশের হুঁশিয়ারি, আমেরিকা কিংবা দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করলেই তার মাশুল গুনতে হবে কিমকে। এই পরিস্থিতিতে দেশে বেড়ে চলা আত্মহত্যার ধাক্কাতে আরও বেকায়দায় কিম। সূত্র: রয়টার্স।