যেসব শ্রমিক কাজে যোগ দিবেন না, আগামীকাল থেকে তাদের কোনো মজুরি দেয়া হবে না। অর্থাৎ ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’। সেই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব পোশাক কারখানাও বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ার করেছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
রোববার দুপুরে বিজিএমইএ ভবনে পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ডাকা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ হুশিয়ার দেন তিনি।
পোশাক রফতানিকারকদের শীর্ষ এই সংগঠনের নেতা এসময় বলেন, একটি পক্ষ নিরীহ শ্রমিকদের ভুল বোঝাচ্ছে। তাদের উস্কানি দিয়ে ভাঙচুরসহ কাজে যোগ না দেয়ার মতো বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে। শ্রমিকদের মজুরি বোর্ডে বৈষম্য আছে বলে তাদের আন্দোলনে নামিয়েছে। একটি কুচক্রী মহল পোশাক শিল্পের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চক্রান্তে নেমেছে। শ্রমিকদের বৈষম্যের কথা বলে তারা ভয়-ভীতি দেখিয়ে কর্মবিরতি পালন করতেও প্ররোচিত করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ প্রেক্ষিতে শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি সবাইকে কর্মস্থলে ফিরে যাবার আহ্বান জানান এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কথা ভেবে উৎপাদন কাজে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানান।
শ্রমিকরা আগামীকাল থেকে কাজ শুরু না করলে কারখানা বন্ধ করা হবে জানিয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শ্রম আইনের ১৩/১ এর ধারা মোতাবেক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে।
বিজিএমইএ’র এই শীর্ষ নেতা আরো বলেন, আমরা একাধিকবার শ্রমিকদের অনুরোধ করেছি কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কাজে ফেরেনি। নতুন বেতন কাঠামোতে বৈষম্য আছে, এই উস্কানি দিয়ে পোশাক খাতের শ্রমিকদের অশান্ত করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পোশাক শিল্প খাতকে অস্থির করে তুলতে শ্রমিক বিপথে পরিচালিত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি সরকার-মালিক ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে মজুরি গ্রেডের ৩, ৪ ও ৫ গ্রেডে প্রয়োজন অনুযায়ী সমন্বয়ের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট সমন্বয়ের পর তা কোনো শ্রমিকের মূল অথবা মোট মজুরির কম হবে না বলেও কমিটি একমত পোষণ করে। এরপরও শ্রমিকরা কাজে ফেরেনি। তারা রাস্তা অবরোধ, কারখানা ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে জনজীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে ব্যবসায়ী মালিকদের জান ও মালের নিরাপাত্তা চান বিজিএমইএ সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে বিজিএমই’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি, সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও ঢাকা উত্তরের মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।