প্রকাশিত : রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

Share This News

নামেই শুধু ইসলামি বীমা কোম্পানি, বাস্তবে নেই কোন সেবা

নামেই শুধু ইসলামি বীমা কোম্পানি, বাস্তবে নেই কোন সেবা

দেশের জীবন বীমা সেক্টরে ১১টি প্রতিষ্ঠান নামের সঙ্গে ‘ইসলামি’ শব্দ জুড়ে দিয়ে ইসলামি বীমা কোম্পানি হিসেবে রিচিতি লাভ করেছে। কিন্তু বাস্তবে  কোম্পানিগুলোর ইসলামী কোনো সেবা বা পণ্য নেই।

বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নজরে এসেছে যে বাস্তবে এসব কোম্পানির কোনো ইসলামি পণ্যসেবা নেই। এমনকি ইসলামি ভাবধারায়ও চলছে না কোম্পানিগুলো।

আইডিআরএ এই অবস্থায় দেশে প্রথমবারের মতো ইসলামি বীমা বিধিমালা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। সংস্থাটি এই নিয়ে একটি খসড়া তৈরি করে সেটি ১০ মার্চ বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স একাডেমিসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছে মতামতের জন্য পাঠিয়েছে। আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে ই-মেইলে মতামত দিতেও বলা হয়েছে।

আইডিআরএর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে যেসব কোম্পানি নামের সঙ্গে ‘ইসলামি’ শব্দ জুড়ে দিয়ে জীবন বীমা কোম্পানি পরিচালনা করছে, সেগুলো হচ্ছে: আলফা ইসলামী লাইফ,

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ,

মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ,

বেঙ্গল ইসলামী লাইফ,

পদ্মা ইসলামী লাইফ,

প্রাইম ইসলামী লাইফ,

প্রটেকটিভ ইসলামী লাইফ,

ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ,

জেনিথ ইসলামী লাইফ,

এনআরবি ইসলামিক লাইফ ও

আকিজ তাকাফুল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি।

রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বীমা করপোরেশন, বিদেশি মেটলাইফ ও ভারতের এলআইসির পাশাপাশি ইসলামি নাম যুক্ত করেনি, এই রকম আরও ২৩টি জীবনবীমা কোম্পানি রয়েছে দেশে।

আইডিআরএর মুখপাত্র ও পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এই বিষয়ে বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে বেশ কিছু কোম্পানির নামের সঙ্গে শুধু “ইসলামি” শব্দটা আছে, আর কিছু নেই। পরিপূর্ণ কোনো ইসলামি বীমা পরিকল্প বা পণ্য নেই।’

তিনি বলেন, ‘এভাবে কোম্পানিগুলো চলতে পারে না। তাই একটা বিধিমালা করা হচ্ছে। এই সংক্রান্ত খসড়ায় সবার মতামত চাওয়া হয়েছে।’

ইসলামি বীমা বিধিমালা হয়ে গেলে শৃঙ্খলার সঙ্গে ইসলামি বীমাপণ্য বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

ইসলামি বীমা বিধিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, ইসলামি বীমা ব্যবসা করতে গেলে আগে আইডিআরএর কাছে আবেদন করতে হবে। আর্থিক সংগতি, শরিয়াহর ভিত্তিতে পরিচালনার সক্ষমতা ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে সন্তুষ্ট হলে আইডিআরএ অনুমতি দেবে। অনুমতি ছাড়া ইসলামি বীমা ব্যবসা করা যাবে না।

প্রতি পঞ্জিকা বছরে কোম্পানিগুলোকে শরিয়াহ কাউন্সিল থেকে এ মর্মে প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে যে তারা শরিয়াহসম্মতভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেছে। সেই প্রত্যয়নপত্র আইডিআরএর কাছে দাখিল করতে হবে।

আইডিআরএ যদি দেখে যে শরিয়াহ পরিপালন লঙ্ঘিত হয়েছে, তখন কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ইসলামি বীমা ব্যবসা স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে।