প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট ২০২৪

Share This News

শেষ সময়েও বলপ্রয়োগ করে থাকতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা

শেষ সময়েও বলপ্রয়োগ করে থাকতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা

শেষ সময়েও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং আরও রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার আগে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাপ দিয়েছিলেন তিনি। তবে পরিস্থিতি যে একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে, সেটা তিনি কিছুতেই মানতে চাচ্ছিলেন না। পরে পরিবারের সদস্যরাসহ বোঝানোর পর পদত্যাগে রাজি হন। এরপর দ্রুততম সময়ে পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টারে করে গোপনে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক সংবাদে এই দাবি করা হয়েছে।

প্রতিবেদন জানিয়েছে, রোববার রাতেই তার একজন উপদেষ্টা-সহ কয়েকজন নেতা বোঝানোর চেষ্টা করেন। তারা বলেন, এই পরিস্থিতিতে সেনার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই একমাত্র পথ। কিন্তু রোববার রাতে হাসিনা তা মানতে চাননি। বরং সোমবার সকাল থেকে আরও কড়া কারফিউয়ের ব্যবস্থা করতে বলেন। কিন্তু সোমবার সকাল ৯টার পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। কারফিউ উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামতে থাকেন। ১০টার মধ্যে ঢাকার রাস্তায় জমায়েত বড় হতে শুরু করে।

সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তিন বাহিনীর প্রধান এবং পুলিশের মহা পরিদর্শককে গণভবনে ডাকা হয়। শীর্ষ কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর গাড়িতে উঠে লাল রঙ দিচ্ছে আন্দোলনকারীরা। কেন বাহিনী আরও কঠোর হচ্ছে না। পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। কিন্তু মহা পরিদর্শকও জানান, এভাবে আর কঠোর অবস্থান নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে।

শেষ সময়েও বলপ্রয়োগ করে থাকতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা

এরপরেই শেখ হাসিনাকে তারা বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ, হাসিনা তখনও তা মানতে চাইছিলেন না। এরপর একটি অন্য ঘরে শেখ রেহানার সঙ্গে কথা বলেন কর্মকর্তারা। তার কাছে অনুরোধ করা হয় হাসিনাকে বোঝানোর জন্য। একসময় ফোনে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গেও কথা বলেন কর্মকর্তারা। এরপর ছেলের সঙ্গে কথা হয় শেখ হাসিনার। তারপর তিনি পদত্যাগ করতে রাজি হন। জাতির উদ্দেশ্যে একটি ভাষণ রেকর্ড করতে চান তিনি।

এই সময়েই গোয়েন্দাদের কাছ থেকে খবর আসে যে বিপুল পরিমাণ জনতা গণভবনের দিকে আসছেন। ফলে শেখ হাসিনাকে ভাষণ রেকর্ড করতে দেওয়া হয়নি। ৪৫ মিনিটের মধ্যে গণভবন ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে বলা হয়।

এর কিছুক্ষণ পর তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দরের হেলিপ্যাডে যান শেখ হাসিনা। সেখানে তাদের কিছু জিনিসপত্র চপারে ওঠানো হয়। এরপর পদত্যাগের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।